Friday, March 24, 2023

কলমাকান্দায় ইউনিয়ন পর্যায়ে মিলছে না স্বাস্থ্যসেবা

শেখ শামীম, কলমাকান্দা প্রতিনিধি

- Advertisement -

নেত্রকোনার কলমাকান্দায় জনবল-সংকটে তৃণমূল পর্যায়ে মিলছে না স্বাস্থ্যসেবা। ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রগুলোতে চিকিৎসক না থাকায় রোগীরা পাচ্ছেন না চিকিৎসাসেবা। ফলে গ্রাম্য চিকিৎসক ও ঔষধ ব্যবসায়ীদের ওপর রোগীদের ভরসা। রোগীদের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাদের ছুটতে হয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। উপজেলার আটটি ইউনিয়নের মধ্যে কলমাকান্দা সদর, নাজিরপুর, খারনৈ, রংছাতি ও পোগলা এই ৫টি ইউনিয়নে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র এবং লেংগুরা ও কৈলাটীর সিধলী এই ২টি ইউনিয়নে উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র রয়েছে। পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের অধীনে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রগুলোতে একজন উপসহকারী মেডিকেল অফিসার, একজন ভিজিটর, একজন ফার্মাসিস্ট, একজন আয়া এবং একজন পিয়ন কাম নৈশপ্রহরী থাকার কথা। আর উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এক জন মেডিকেল অফিসার, একজন উপসহকারী মেডিকেল অফিসার, একজন ফার্মাসিস্ট, একজন মিডওয়াইফ, একজন পিয়ন কাম নৈশপ্রহরী থাকার কথা।

- Advertisement -

কিন্তু কলমাকান্দা সদর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে কোন জনবল নেই। সপ্তাহে একদিন অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা ভিজিটর স্বাস্থ্যসেবা দেন। পোগলায় একজন ভিজিটর ও একজন পিয়ন কাম নৈশপ্রহরী। তারমধ্যে ভিজিটর মেহেরুননেছা দীর্ঘদিন ধরে নেত্রকোনা সদরে ডেপুটেশনে আছেন। পিয়নও আবার মাসের পর মাস ধরে অনুপস্থিত রয়েছে। নাজিরপুর ইউনিয়নে একজন উপ-সহকারী মেডিকেল অফিসার, একজন ভিজিটর ও একজন আয়া ছাড়া আর কেউ নেই। তারমধ্যে ভিজিটর সুরাইয়া আফসানা দীর্ঘদিন ধরে নেত্রকোনা মাতৃসদনে ডেপুটেশনে আছেন। খারনৈ ইউনিয়নে একজন পিয়ন কাম নৈশপ্রহরী ছাড়া আর কেউ নেই। রংছাতি ইউনিয়নে একজন উপ-সহকারী মেডিকেল অফিসার, একজন আয়া, একজন পিয়ন কাম নৈশপ্রহরী ছাড়া আর কেউ নেই। তারমধ্যে পিয়ন কাম নৈশপ্রহরী তোফায়েল আহম্মেদ কলমাকান্দা সদর হাসপাতালে ডেপুটেশনে রয়েছেন। আর লেংগুরা ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে একজন উপ-সহকারী মেডিকেল অফিসার ছাড়া আর কেউ নেই। কৈলাটী ইউনিয়নের সিধলীতে একজন উপ-সহকারী মেডিকেল অফিসার ও একজন পিয়ন কাম নৈশ্যপ্রহরী ছাড়া আর কেউ নেই।

দীর্ঘদিন ধরে ৫টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের মধ্যে রংছাতি ও নাজিরপুর ছাড়া সবকটিতে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে । ফলে গ্রামের লোকজন চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। আর লেংগুরা ও সিধলী উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে মেডিকেল অফিসারের পদ থাকলেও সেখানে কোন মেডিকেল অফিসার না থাকায় জটিল রোগীদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে চিকিৎসাসেবা নিতে হচ্ছে।

- Advertisement -

সরেজমিনে দেখা গেছে, পোগলা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রটি তালা বদ্ধ অবস্থায় রয়েছে। পরে এ বিষয়ে কথা হলে কেন্দ্রে পাশের বাসিন্দা জালাল উদ্দীন (৫০), নাসিমা আক্তার (২৫), সোহাগ মিয়া (২১), শ্যামল সরকার (২০), কুলসুমা বেগম (৩৫) ও পলাশহাটি গ্রামের রুকুজ্জামান (৩৩) বলেন, গত কয়েক মাস ধরে এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি খুলেনা। এখানে নাকি ডাক্তার নেই। আমাদের অসুখ-বিসুখ হলে ১৫ কিলোমিটার দূরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যেতে হয়। এতে করে আমাদের অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়।

পোগলা ইউপির চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক বলেন, আমার ইউনিয়নে একটি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র আছে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে সেটি বন্ধ আছে। সেকারণে ইউনিয়নবাসী চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। কেন্দ্রেটিতে আসবাবপত্রসহ প্রয়োজনীয় চিকিৎসার সরঞ্জাম থাকলেও বিনাচিকিৎসায় ফিরতে হচ্ছে রোগীদের।

- Advertisement -

কলমাকান্দা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. বিজয় প্রকাশ বিশ^াস বলেন, জনবল কম থাকায় অসুবিধে হচ্ছে। এবিষয়টি আমরা উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।
কলমাকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মুহাম্মদ আল মামুন, সিধলী ও লেংগুরায় মেডিকেল অফিসার না থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে মেডিকেল অফিসার নিয়োগ দেওয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়েছে। তাছাড়া লেংগুরা ও সিধলী এ’দুটি কেন্দ্রে উপ-সহকারি কমিউনিটি মেডিকেল অফিসাররা চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
আরও পড়ুন: রুর‍্যাল জার্নালিস্ট ফাউন্ডেশন কক্সবাজার জেলা শাখার আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

- Advertisement -
সম্পর্কিত সংবাদ
- Advertisment -

সর্বশেষ সংবাদ