৪ লক্ষাধিক জনসংখ্যার উপজেলা নেত্রকোনার কেন্দুয়া। ৫০ শয্যার কেন্দুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একমাত্র অ্যাম্বুলেন্সটি নষ্ট হয়ে মেরামতের জন্য পড়ে আছে কিশোরগঞ্জের সজিব ওয়ার্কশপে। এছাড়া নেত্রকোনা ও কিশোরগঞ্জের ২টি ফিলিং ষ্টেশনে ১৫ থেকে ১৬ লাখ টাকা জ্বালানি (তেল খরচ) বকেয়া পড়েছে বলে উপজেলা হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে। সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ঘুরে এসব তথ্য জানা জায়।
এর আগে রোববার উপজেলার চিথোলিয়া গ্রামের স্ট্রোকে আক্রান্ত রোগী আবু সায়েম আজাদের ভাগ্নে সাফায়েত আলম খান জানান, তার মামা আবু সায়েম আজাদ গত ২ ফেব্রুয়ারি স্ট্রোকে আক্রান্ত হলে উপজেলা হাপসাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ডাক্তার জরুরি ভিত্তিতে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। কিন্তু অ্যাম্বুলেন্সটি নষ্ট বলে জানায় ড্রাইভার শহিদুল ইসলাম। পরে সিএনজিতে করে ইশ্বরগঞ্জ হাসপাতালে নিয়ে অক্সিজেন দিয়ে ওই হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্সে করে ময়মনসিংহ নিতে হয়েছে। উপজেলার বাট্টা গ্রামের রানা মিয়া জানান, তার পিতা লিটন খান (৫১) গত ১২ ফেব্রুয়ারি স্ট্রোকে আক্রান্ত হলে কেন্দুয়া উপজেলা হাসপাতালে নেওয়া হয়।
কর্তব্যরত চিকিৎসক ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। কিন্তু অ্যাম্বুলেন্সটি নষ্ট থাকায় সিএনজিতে করে ময়মনসিংহ নিতে হয়েছে। এতে টাকার অপচয় ও সয়ম বেশী ব্যয় হওয়ায় রোগী নিয়ে সমস্যায় পড়তে হয়েছে। এ বিষয়গুলো জানতে সোমবার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গেলে হাসপাতাল সূত্রে জানায়, জনসংখ্যার দিক দিয়ে আমাদের কেন্দুয়া উপজেলা অনেক বড়। একটি মাত্র পুরাতন অ্যাম্বুলেন্স হওয়ায় সেবা দিতে কঠিন হয়ে পড়ে। সার্ভিস দিতে গিয়ে প্রায় সময়ই নষ্ট হয়ে পড়ে অ্যাম্বুলেন্সটি। আমাদের এই উপজেলা হাসপাতালে অন্তত ২টি অ্যাম্বুলেন্স দরকার। দৈনিক গড়ে ৪টি থেকে ৫টি করে কল হয় এ্যাম্বুলেঞ্জ এর জন্য। মাসে ২ আড়াই লাখ টাকা জ্বলানির বিল আসে। গত ৮ ফেব্রুয়ারি অ্যাম্বুলেন্সটিকে মেরামতের জন্য কিশোরগঞ্জের সজিব ওয়ার্কশপে পাঠানো হয়েছে। আগামী সপ্তাহে মেরামত হবে বলে তারা জানিয়েছেন।
তাছাড়া নেত্রকোনার পদ্মা ফিলিং ষ্টেশন এবং কিশোরগঞ্জের মুরাদ ফিলিং ষ্টেশন ২টির জ্বালানির (তেল খরচের) ১৫/১৬ লাখ টাকা বকেয়া পড়েছে। বরাদ্দ না পাওয়ায় বাকি পরিশোধ করা যাচ্ছে না। সূত্র আরও জানায়, পার্শ্ববর্তী মদন ও আটপাড়া আমাদের চেয়ে কম জনসংখ্যার উপজেলা হলেও তাদের হাসপাতালের বরাদ্দ যা আমাদের বড় উপজেলার জন্যও তাই বরাদ্দ। আমাদের বরাদ্দ বেশি হলে সেবার মান আরও বৃদ্ধি করা যেতো। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডাক্তার মাশরুফ ওয়াহিদ জানান, অ্যাম্বুলেন্স মেরামত ও তেল খরচের বকেয়া এবং বরাদ্দ বৃদ্ধির জন্য উর্ধ্বতন কর্তপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়েছে। তারা জানিয়েছেন, আগামী এপ্রিল মাসের আগে বরাদ্দ পাওয়া সম্ভব নয়। আমরা আমাদের সমস্যাগুলো উর্ধ্বতন কর্তপক্ষের কাছে আবেদনের মাধ্যমে জানিয়ে রাখছি।
আরও পড়ুন: শিক্ষকের খুঁটির জোর কোথায় সরকারি স্কুলে বসতঘর নির্মাণ