নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার ৬ নং সান্দিকোনা ইউনিয়নের মহিলা আওয়ামীলীগের সভাপতি সৈয়দা নাসিমা আক্তারের বাড়িতে চলে আসছে দীর্ঘ দিন ধরে বিভিন্ন অসামাজিক কার্যক্রম। স্থানীয় লোকজন এসব কার্যক্রম বন্ধের প্রতিবাদ জানালে উল্টো তাদেরকে দেয়া হয় নাসিমার পক্ষ থেকে নানা রকমের হুমকি ধমকি। এমনটি অভিযোগ করেছেন, এলাকাবাসী।
ধৈর্যের বাধ ভেঙ্গে যাওয়ায় বৃহস্পতিবার দুপুরে অসামাজিক কার্যক্রম বন্ধের প্রতিবাদে সান্দিকোনা ইউনিয়নের ভঙ্গানিয়া মোড়ে কেন্দুয়া আঠারোবাড়ি সড়ক অবরোধ করে ঘন্টা ব্যাপী বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। এতে অংশ নেয় ওই ইউনিয়নের মুকন্দাবাদ বালুচর হাফিজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক শিক্ষার্থী সহ শতাধিক লোকজন। এসময় সড়কে যানবাহন চলাচলে বিঘœ সৃষ্টি হলে কেন্দুয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে যান চলাচলের স্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে দেয়।
এলাকাবাসী জানায় সান্দিকোনা ইউনিয়নের মুকান্দাবাদ গ্রামের শিক্ষক মোঃ আলীর স্ত্রী সৈয়দা নাসিমা আক্তার ইউনিয়ন মহিলা আওয়ামীলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। তার বাড়িতে সময়ে অসময়ে অনেক অপরিচিত মহিলার আনাগুনা জনমনে নানা প্রশ্নের জন্ম দেয়। ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ নেতা নাসিমা আক্তারের ভাসুর আলী আজগর, মোঃ শফিকুল ইসলাম, ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি মোঃ সামছুদ্দিন, সাধারন সম্পাদক নজরুল ইসলাম, ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম, ব্যবসায়ী আফাজ উদ্দিন ও মুকান্দাবাদ বালুচর হাফিজিয়া মাদ্রাসার মোহতামিম নজরুল ইসলাম বলেন, সৈয়দা নাসিমা আক্তার রাজনীতির আড়ালে অবৈধ অর্থ উপর্জনের লক্ষ্যে তার বাড়িতে মহিলাদেরকে দিয়ে অসমাজিক কার্যকলাপ করান।
এ বিষয়টি আমরা বার বার তাকে সতর্ক করলেও তিনি উল্টো আমাদেরকে সায়েস্তা করার হুমকি দেন। তারা বলেন, এই অসামাজিক কার্যক্রমের ফলে যুব সমাজ বিপথগামী হয়ে যাচ্ছে। তা বন্ধ না হলে আমরা বড় ধরনের আন্দোলনের ডাক দেব। এদিকে ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি মোঃ সামছুদ্দিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর সৈয়দা নাসিমা আক্তারের বাড়িতে অসমাজিক কার্যকলাপ বন্ধের দাবিতে ১৬ নভেম্বর বুধবার লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। ইউপি সদস্য মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, নাসিমা আক্তার দীর্ঘদিন ধরে এসব কুকর্ম করে আসছেন। আমরা তাকে নিষেধ করেছি। কিন্তু তিনি কারো কথা শুনছেন না। উল্টো প্রতিবাদকারীদেরকে নানান হুমকি ও ভয়ভিতি দেখান।
কেন্দুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাবেরী জালাল বলেন, সৈয়দা নাসিমা আক্তারের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য কেন্দুয়া থানা ওসিকে পরামর্শ দেয়া হয়েছে। কেন্দুয়া থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেন, নাসিমা আক্তারের বিরুদ্ধে এলাকাবসীর দায়ের করা অভিযোগটির তদন্ত চলছে।
কেন্দুয়া সার্কেলের সহকারি পুলিশ সুপার জুনাঈদ আফ্রাদ বলেন, মানবন্ধনের খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছি, মানববন্ধনের পরে মুকান্দাবাদ বালুচর মাদ্রাসা প্রাঙ্গনে মাদ্রাসার ছাত্র শিক্ষক ও এলাকাবাসীকে নিয়ে একটি উঠোন বৈঠকও করেছি। তিনি বলেন, অভিযোগটি অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে প্রকৃত সত্য উদঘাটনের জন্য।
এ ব্যাপারে নাসিমা আক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি নারীদের নিয়েই রাজনীতি করি। রাজনীতির সুবাদে অনেক নারী আমার বাড়িতে আসা যাওয়া করেন। কিন্তু আমার নিজের লোক সহ কিছু এলাকাবাসী মিলে আমাকে সামাজিক ভাবে হেয় করার জন্য আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলেছেন। আমার বাড়িতে অসামাজিক কার্যকলাপ হয় এমন কোন প্রমান কেউ দিতে পারবে না। এটি আমার বিরুদ্ধে নিছক ষড়যন্ত্র। আমিও এই ষড়যন্ত্রের সুষ্ঠু তদন্ত দাবী করছি।
আরও পড়ুন: ঝিনাইগাতীতে শিক্ষার্থীরা ভালবাসার অশ্রুুজলে বিদায় জানালেন শিক্ষককে