ইউপি চেয়ারম্যান সারোয়ার জাহান কাউসার। ছবি: সংগৃহীত
কেন্দুয়া উপজেলার ৯নং নওপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এডভোকেট সারোয়ার জাহান কাওসারের বিরুদ্ধে অতিদরিদ্রের কর্মসংস্থান কর্মসূচীর শ্রমিকদের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে।
১৪ জুলাই রবিবার বেলা ৩ টায়া উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে উভয় পক্ষে উপস্থিতিতে এক তদন্ত অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইমদাদুল হক তালুকদারের নেতৃত্বে তদন্ত অনুষ্টানে ইউ.পি চেয়ারম্যান ও শ্রমিকরা উপস্থিতি ছিলেন।
জানা যায়, গত ১০ জুলাই নওপাড়া ইউনিয়নে বিভিন্ন গ্রামের ১৭ জন শ্রমিক উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগে বলা হয়, নওপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এডভোকেট সারোয়ার জাহান কাওসার ১শ২৫ জন শ্রমিকের মধ্যে মাত্র ৩০ জন শ্রমিককে দিয়ে কাজ করান।
শ্রমিক নেতা গনিতাশ্রম গ্রামের সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে মোঃ সেলিম মিয়া বলেন চেয়ারম্যান এডভোকেট সারোয়ার জাহান কাওসার ৪০ দিনের কর্মসূচীতে গত আড়াই তিন মাস যাবৎ মাটি কাটা কার্যক্রমের সাথে জড়িত প্রতি ধাপেই ৩০ জনকে দিয়ে ৩৯ দিন কাজ করিয়ে ১শ২৫ জনের বিল উত্তোলন করেন।
উত্তোলন কৃত টাকা শ্রমিকদের না দিয়ে নিজেই আত্মসাত করেন। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে রবিবার বেলা ৩টায় তদন্ত ও শুনানী কালে ১৪ জন শ্রমিক উপস্থিত হন। তারা তদন্ত কালে অভিযোগের সত্যতা প্রমান করতে ব্যর্থ হন। শ্রমিকরা তদন্ত কালে তদন্ত কর্মকর্তাকে জানান, চেয়ারম্যান ও তাদের মাঝে কিছুটা ভুল বুঝাবুঝি ছিল। যে কারনে তারা কোনদিন কাজেই যায়নি।
শ্রমিকরা তাদের ভুল বুঝতে পেরে তদন্ত কালে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের জন্য দুঃখ প্রকাশ ও ক্ষমা চান।
এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান এডভোকেট সারোয়ার জাহান কাওসার বলেন, জনগণের ভোটে আমি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছি। চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই একটি কুচক্রি মহল আমাকে হয়রানি করার জন্য এই অভিযোগটিসহ অনন্ত ২০টি অভিযোগ বিভিন্ন জনকে দিয়ে দিয়েছে। কিন্তু আল্লাহ্ রহমতে আমি সত্য পথে থাকায় কোন অভিযোগ দিয়েই আমাকে ফাঁসাতে পারেনি।
৪০ দিনের অতিদরিদ্রদের কমর্সংস্থান কর্মসূচীর ১৭ জন শ্রমিক আমার বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের যে অভিযোগ দিয়েছেন সেটিও তদন্তে মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমাদদুল হক তালুকদার বলেন গত ১০ জুলাই আমার দপ্তরে ১৭ জন শ্রমিক নওপাড়া ইউ.পি চেয়ারম্যান এডভোকেট সারোয়ার জাহান কাওসারের বিরুদ্ধে শ্রমিকদের টাকা উত্তোলন করে আত্মসাতের যে অভিযোগ দিয়েছেলেন তদন্তে তা মিথ্যা প্রমানিত হয়েছে।
শ্রমিকরা প্রকৃত পক্ষে কোন কাজই করেননি। শ্রমিকরা দাবি করছেন তাদেরকে কাজ করিয়ে টাকা দেওয়া হয়নি, চেয়ারম্যন টাকা উত্তোলন করে আত্মসাত করেছেন এ বিষয়টিও শুনানী ও তদন্ত কালে তারা প্রমান করতে ব্যর্থ হয়েছেন। তিনি আরো বলেন তদন্ত কালে আমরা চেয়ারম্যানের দাখিলকৃত বিল মিলিয়ে দেখেছি যেসকল শ্রমিকরা অভিযোগ করেছেন তাদের নামে চেয়ারম্যান কোন বিল দাখিল করেননি।
তাছাড়া বিলের টাকা যায় প্রত্যেক শ্রমিকের মোবাইল ব্যাংকিংয়ে। এই অভিযোগে দেখা গেছে শ্রমিকদের নামে কোন বিলও হয়নি এবং মোবাইল ব্যাংকিংয়েও কোন টাকা যায়নি। মিথ্যা অভিযোগের ক্ষেত্রে কি পদক্ষেপ নিয়েছেন জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন যারা অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেননি এবং যেসব ভূয়া শ্রমিক তদন্ত অনুষ্টানে মিথ্যা সাক্ষ্য দিতে এসেছিলেন এরকম তিন জন শ্রমিককে গ্রেপ্তার করে আইগত ব্যবস্থার চিন্তা গ্রহণ করা হয়েছিল, পরে মানবিক কারণে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি আইনে তাদেরকে ক্ষমা করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ অতি দরিদ্রদের কর্মসংস্থান কর্মসূচির শ্রমিকের মুজুরির টাকা চেয়ারম্যানের পেটে?